গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: স্বাধীনতার পর থেকে গোপালগঞ্জ-২ আসন হতে অপ্রতিরোধ্য গতিতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছে বর্তমান সংসদ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম।এ আসনে তিনি এ আসন থেকে ৭ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
২১টি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা ও কাশিয়ানী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে এ আসনটি গঠিত। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে বিভিন্ন দলের প্রার্থীদের তৎপরতা শুরু হয়েছে।
এ আসনে তিনি একমাত্র অপ্রতিদ্বন্দ্বি ব্যক্তি। বিগত নির্বাচনে শেখ সেলিমের সাথে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তাদের প্রত্যেকেরই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। এ আসনে তার জনপ্রিয়তা ঈর্ষনীয়। এলাকার মানুষের সাথে তার রয়েছে নাড়ীর সম্পর্ক বললে ভুল বলা হবে না। নির্বাচনী এলাকার মানুষের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রয়েছে জাতীয় এ নেতার। সেই সাথে বিগত কয়েক বছরে গোপালগঞ্জে বিশেষ করে তার নির্বাচনী এলাকায় যে উন্নয়ন সাধিত হয়েছে তা কল্পনাকে হার মানায়।
বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজে, ডেন্টাল কলেজ, চক্ষু হাসপাতালসহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মান, বিসিক শিল্প নগরী, এক্সপোর্ট প্রমোশন জোন, রাস্ত-ঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট, রেডিও সেন্টার, ইডিসিএল ফ্যাক্টরী নির্মান, ঘরে ঘরে বিদ্যুত, বেকারদের চাকরি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে তিনি ইতিমধ্যে সবার মনের মনি কোঠায় স্থান করে নিয়েছেন। স্বাভাবিক কারনে গোপালগঞ্জের মানুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভক্ত।
এছাড়া শেখ সেলিমের কনিস্ট পুত্র যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিষ্টার শেখ ফজলে নাঈম প্রতি মাসে একবার করে গোপালগঞ্জে তার পিতার নির্বাচনী এলাকায় আসছেন এবং জনসংযোগ ও বিভিন্ন সভা সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। মূলত এ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে অন্য কোন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে শোনা যায়নি।
অপরদিকে, বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, সাবেক সভাপতি সাবেক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সভাপতি এম এইচ খান মঞ্জু, সাধারন সম্পাদক এম মনসুর আলী, সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান পিনু দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।
এ আসনে বিএনপি সংগঠিত নেই। জেলা বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ এর আগেও এ আসন থেকে দুই বার দলীয় মনোনয়নে নির্বাচন করেন। বর্তমানে দলের দুঃসময়েও তিনি মাঠে রয়েছেন এবং নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযানসহ কেন্দ্র ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে যাচ্ছেন। এবারও তিনি এ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন। দলীয় মনোনয়ন পাবার ব্যাপারেও তিনি যথেষ্ট আশাবাদী।
বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এইচ খান মঞ্জু দীর্ঘ দিন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সক্রিয় নেই। এছাড়া বিএনপির সাধারন সম্পাদক এম মনসুর আলী ও সাবেক সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান পিনু দলের সভাপতির সাথে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীতে অংশ নিয়ে আসছেন। তারাও দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।
জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা এ আসনে খুবই দূর্বল। তেমন কোন তৎপরতা চোখে পড়ে না। পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষক পার্টির সভাপতি সাইদুর রহমান টেপা ও কেন্দ্রীয় সংগঠনিক সম্পাদক শেখ আলমগীর হোসেন দলের কাছে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা যায়।
প্রকাশ্যে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কোন কার্যক্রম নেই। তবে গোপনে তাদের কার্যক্রম রযেছে বলে বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে। জামায়াতে ইসলামীর কোন প্রার্থীও নামও জানা যায়নি।
এছাড়া, জাসদ (ইনু)-র জেলা সভাপতি শেখ মাসুদুর রহমান মাসুদ, জাসদ (আম্বিয়া) শহিদুল হক, হিন্দুলীগের অধ্যাপক শুকদেব বিশ্বাস, কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতা ডাঃ অসিত বরন রায়ের নাম সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে শোনা যাচ্ছে। ডাঃ অসিত বরন রায় ১৪ দল গত ভাবে এ আসনে মনোয়ন চাইতে পারেন।
জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক ইলিয়াস হক জানান, গোপালগঞ্জ-২ আসন আওয়ামীলীগের একটি দূর্ভেদ্য ঘাটি। জননেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম এ আসনের ৭ বারের সংসদ সদস্য। ভোটারদের ভাল মন্দ সব খবরই তিনি রাখেন। এছাড়া এমন কোন উন্নয়ন নেই গোপালগঞ্জ-২ আসনে হয়নি। এবারও তার কোন প্রতিদ্বন্দ্বি থাকবে না। শেখ সেলিমের সাথে যারা নির্বাচনে অংশ নিবেন এবারেও তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান বলেন, গোপালগঞ্জের মানুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শে বিশ্বাসী ও একক ভাবে নৌকার সমর্থক। আগামী সংসদ নির্বাচনেও দলের প্রার্থীরা বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুনরায় সরকার গঠন করে হ্যাট্রিক করবে।